এবিএনএ : গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যখন দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছিলেন নরেন্দ্র মোদি ঠিক তখনই তার দল বিজেপির ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়।
হ্যাক করে পর ওই সাইটের পেজে ছবিসহ গরুর মাংসের ছয়টি রেসিপি পোস্ট করা হয়। তবে কে বা কারা এই কাজ করেছেন এখনও তা জানা যায়নি।
ঘটনাটির কথা প্রথম জানান ফরাসি সাইবার নিরাপত্তা গবেষক ইলিয়ট এল্ডারসন।
এ নিয়ে তিনি প্রথম টুইটারে লেখেন, ‘ডিয়ার @ BJP4India আপনাদের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে। এবার ওয়েবসাইট রিস্টোর করতে কতদিন লাগবে?’
এরপর দ্বিতীয় টুইট করেন তিনি। সেখানে বিজেপিকে ব্যঙ্গ করে তিনি লেখেন, ‘বিজেপি মানে যে বিফ জনতা পার্টি, এটা তো জানতাম না!’
এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত ৩০ মে হ্যাক হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বন্ধ করে দেয়া হয় ওয়েবসাইটটি। এরপর দিল্লি বিজেপির ওয়েবসাইটকে বিজেপি ইন্ডিয়া ওয়েবসাইটে রি-ডিরেক্ট করে দেয়া হয়।
বিজেপির ওয়েবসাইট হ্যাকের বিষয়টি এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে হ্যাক করা হয়েছিল ওয়েবসাইটটি। তবে তখন সেখানে বিফ রেসিপি পোস্ট করা হয়নি।
বিজেপির সাইটে গরুর মাংস পোস্ট করা দেখে প্রথমে নেট দুনিয়াবাসী হতভম্ব হলেও এটা আর কেউ বুঝতে বাকি রাখেননি যে, এটা করে এক ধরনের প্রতিবাদ জানিয়েছে হ্যাকাররা।
ভারতে গোরক্ষার নামে কট্টরপন্থিদের মুসলিমদের ওপর হামলা, নির্যাতন দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সম্প্রতি গরুর মাংস রাখার দায়ে নারীসহ চার মুসলিমকে বেধড়ক পেটানোর ঘটনা ঘটে ভারতে। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয় মোদি সরকার। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরে ভারতের উত্তর প্রদেশের দাদরি এলাকায় গরুর মাংস সংরক্ষণের গুজবে মোহাম্মদ আখলাককে পিটিয়ে হত্যা করে গ্রামবাসী।
সেসব ঘটনাকে সামনে রেখেই হয়তো এভাবে দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ওয়েবসাইটে গরুর মাংসের রেসিপি পোস্ট করে সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানান হ্যাকাররা।
তবে কে বা কারা ওয়েবসাইট হ্যাক করে এ কাণ্ড ঘটিয়েছে সে বিষয়ে কেউ দায় স্বীকার করেনি বা এ ঘটনায় এখন পর্যণ্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি ভারতীয় প্রশাসন।